আমি বাংলাদেশি একজন নারী যিনি যৌবনের প্রথম প্রহরে এসে সমবয়সী আর একটি নারীর প্রতি মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ি। কৈশোরে এমনিতেই হরমোনগত অস্থিরতা, ধৈর্যহীনতা, উত্তালতা মন এবং মস্তিষ্ককে টাল মাটাল করে রাখে, তারওপর আবার একটি ছেলের বদলে একটি মেয়ের প্রতি মন ছুঁটে যাওয়া, তাকে কাছে পেতে চাওয়া যেটা বাংলাদেশী প্রেক্ষাপটে খুবই ‘অস্বাভাবিক‘, ‘অদ্ভূৎ‘, ‘অকল্পনীয়‘, ‘অযাচিত‘, এবং ‘অসম্ভব‘। সেসময় টা ‘লেসবিয়ান‘ কথাটার মাত্র বাংলাদেশে প্রচলন হয়েছে ছেলেপেলেদের মুখে মুখে, বন্ধুমহলে একে অন্যের সাথে খুনসুটি বাধানোর জন্য দুষ্টুমি করে এই শব্দটি ব্যবহৃত হতো। বিশ্ব সাহিত্যে, ধর্মীয় গ্রন্ধগুলোতে, পুরানো স্থাপত্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অজস্ত্র যৌনতার ছবি, কিন্তু আমাদের মতো রক্ষণশীল দেশগুলোতে ‘ঋতুস্রাব‘, ‘যৌনতা‘-এর মতো শব্দ তো মুখে উচ্চারণ–ই করা যাবে না সেখানে ‘সমকামিতা‘, ‘উভকামিতা‘ তো নিতান্তই ‘হারাম‘। এমতাবস্থায় আমার কৈশোরের ‘অস্বাভাবিক‘ প্রেম আমাকে টু শব্দটি না করেই জলাঞ্জলি দিতে হলো। প্রেমিক– প্রেমিকার বিচ্ছেদে যতটা কষ্ট হয়, আমার ক্ষেত্রে প্রেমিকার সাথে প্রেমিকার বিচ্ছেদেও ঠিক ততটাই কষ্ট হয়েছিল। তফাৎ শুধু একটাই অন্যেরা তাদের কাছের মানুষদের সাথে কষ্ট ভাগ করে কিছুটা হলেও স্বস্তি নিতে পারে যেটা আমার মতো প্রেমের ক্ষেত্রে সম্ভব নয়।
.
এর কয়েক বছর পর, প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতে, নয়াদিল্লির হাইকোর্ট স্বীকৃতি দেয় যে সমকামিতা কোনো অপরাধ নয় (রায়, ২০১০ )। কিন্তু তখন আমার দেশে সমকামীরা বা উভকামীরা নিজেরদের যৌন আসক্তি বা পছন্দ কে জীবনের নিরাপত্তা, লোকলজ্জার ভয়ে চাপিয়ে গিয়ে বিপরীত লিঙ্গের ব্যক্তির সাথে বিয়ে করে বিষমকামী হওয়ার ভান করে জীবন যাপন করছে (AI, 2010)। আমার মতো কিছু ভিন্ন উদাহরণও আছে যারা উভকামী এবং বিপরীত লিঙ্গের প্রেমে পরেই বিয়ে করে সংসার করছে। এখানে প্রশ্নটা শুধু বিয়ে করে সংসারী হওয়ার না, অথবা যৌন সঙ্গী খোঁজার না। আমার মতে, আমার নিজস্ব স্বতন্ত্রতাকে প্রকাশ করার মানবিক অধিকার আমার আছে, প্রতিটি মানুষের আছে। অভিজিৎ রায়ের ‘সমকামিতা‘ বইটিতে প্রাণিজগতে বিদ্যমান উভকামিতা এবং সমকামিতার এমন ভরি ভরি বৈজ্ঞানিক ভাবে পরীক্ষিত উদাহরণ দেয়া আছে। যেটা প্রাণিজগতে সম্ভব সেটা মনুষ্যজগতে কেন সম্ভব নয় ?
বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র, কিন্তু সেখানে ধর্মীয় অনুভূতি মানুষকে গ্রাস করে আছে পরজীবীর মতো, এখানে ধর্মীয় নেতারা সাদাকে কালো আর কালোকে সাদা বললে সাধারণ জনগণ চোখ বুজে তাই বিশ্বাস করবে, উল্টে প্রশ্ন করবে না পাচ্ছে সৃষ্টিকর্তাকে না নারাজ করে হয় ! অনলাইনের যুগে এখন অনেক সহজ হয়েছে জনগণের ধ্যান ধারণা বোঝা, কেননা অনলাইন পোর্টাল–এ যে কোনো খবরের নিচে জনসাধারণের মতামত পড়লেই টা জানা যায়। উভয়লিঙ্গ, সমকামিতা, উভকামিতা বিষয়ক যে কোনো খবরের নিচে জনগণের অকথ্য ভাষায় গালাগাল, বাজে মন্তব্য, এসব নিয়ে ধর্মীয় অনুশাননমূলক মন্তব্যগুলো কোনোপ্রকার সন্দেহ ছাড়াই বলে দেয় যে আমি উভকামী এই কথাটি বললে আমাকে তো কোপানো হতেই পারে, অথবা ঔপনিবেশিকদের কাছ থেকে ‘অর্জন‘ করা ধারা ৩৭৭ অনুযায়ী আমাকে ‘অপরাধী‘ বলে জেলে পুড়ে ফেলা হবে, মানবাধিকার কর্মী এবং উকিলদের সাথে দেখা করতে দেয়া হবে না আর আমার পরিবারকে তো অপমান বঞ্চনা সইতে হবে, অপদস্ত হতে হবে, হাসির পাত্র হতে হবে এবং ইহা আমার বংশের কয়েক প্রজন্ম পর্যন্ত চলতে থাকবে যেমনটি হয়েছে বাংলাদেশী প্রথম সমকামী ম্যাগাজিন ‘রূপবান‘ এর প্রতিষ্ঠাতা জুলহাস ও তার বন্ধুর সাথে, র্যাব দ্বারা ২০১৭ সালে সমকামী আসর বসানোর দায়ে গ্রেফতারকৃত ২৭ জন পুরুষের সাথে (Hossain, 2019)
.
.
References
AI, 2010. Correspondence from the Refugee Coordinator providing information from a Bangladeshi researcher with the South Asian team of the International Secretariat of AI., Toronto: Amnesty International (AI).
Hossain, A., 2019. Section 377, Same-sex Sexualities and the Struggle for Sexual Rights in Bangladesh. Australian Journal of Asian Law, Volume 20 (1) , pp. 1-11.
রায়, অ., ২০১০ . সমকামিতা. ১ম ed. Dhaka: শুদ্ধস্বর .
.
27 Responses
দেশে আসলে তোড় নিস্তার নাই। তোরে কাইটা টুকরা করা হবে।
কুত্তার বাচ্চা। তুই ইসলামের শত্রু। আর ইসলামের শত্রুকে মরতে হবে।
সমকামীদের এইভাবেই আত্মহত্যা না হোলে হত্যা করা উচিত। কারন এটা সমাজের শত্রু। তুই এই সমাজের শত্রু। তুই আত্মহত্যা কর।
তুই এটা কুলাঙ্গারের বাচ্চা। ইসলামের শত্রু।
তোড় মত জারজ সন্তানের বেচে থাকা এই বাংলাদেশের সমাজের জন্য অভিশাপ।তোরে আল্লাহর নামে কতল করে আবার ইসলাম জিহাদ কায়েম করা হবে ইনশাল্লাহ।
ইসলামতন্ত্র নিপাত যাক।
তোকে হত্যা করে ইসলাম আবার কায়েম হবে।
সত্যিকারের মুসলমান কখনো ধর্ষণ করেনা। ইসলামে নারীদের দেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ মর্যাদা
এসব কটু মন্তব্য করা উচিত হয়নি একদম! এর শাস্তি তোকে পেতেই হবে।
চুতমারানির বাচ্চা তুই কি জানিস? সময় থাকতে সাবধান করে দিলাম। নাইলে কল্লা কিন্তু আলগা কইরা ফালামু কইলাম
হতাশা তোর পুটকি দিয়া ঢুকাইমু শালি খানকি
তোদের মতো মিথ্যাচারীদেরকে পুন্দানো উচিত
এই বাংলাদেশে যেন তোকে আর না দেখি, নাহলে তোর পরিবার তোর লাশ দেখার সৌভাগ্যও পাবেনা।
এগুলো মিথ্যাচার
আমি তোরে সামনে পাইলে প্রথমে ইচ্ছামতো পুন্দামু, তারপর তোর ধোন কাইটা রাস্তার পাশে ফালাই রাখমু
শালি খানকির পো তোর কি সমস্যা? মিথ্যা কথা বলার জায়গা পাস না?
তোরে কতল করা কিন্তু মাত্র সময়ের ব্যাপার। সময় থাকতে ভালো হয়ে যা ।
সাহস থাকলে দেশে আয়তো দেখি, তারপর দেখি তোর কতবড়ো হ্যাডম?
tore bangladeshe paile maira falamu shala bainchod
বিদেশে বসে সবাই অনেক বড় বড় কথা বলতে পারে। পারলে একবার দেশে আয় না?
শুয়োরের বাচ্চা চড়াইতে চড়াইতে মেরে ফেলবো।
কুত্তার বাচ্চা তোরে সামনে পাইলে ডগি স্টাইলে চুইদা পাছা ফাটাইয়া ফালাইমু, খানকির বাচ্চা।
বেয়াদবির একটা সীমা থাকা উচিত। তোরে শাস্তি দেওয়ার সময় আসছে।
হালার পো তোরে না মানা করসিলাম লেখালেখি করতে? তারপরও? দাড়া তোরে মজা বুঝানোর সময় হয়ে গেসে।।
ei je gonotontrer kotha bolchis, jodi gonotontro na thakle ei baje kotha golo likte partinare khankir pola.
তুই নিজেকে কি ভাবিস?
সময় থাকতে ফালতু লেখালেখি বন্ধ করে ফেল নাইলে কিন্তু ভালো হবেনা বলে দিলাম।