.আমি একজন lesbian, এটা আমি বুঝতে পেরেছিলাম যখন আমি কলেজে পড়ি । তখন অনলাইন সোশ্যাল মিডিয়া এতটা সহজলব্ভ ছিল না, বহির্বিশ্বের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র খবর হাতে হাতে সবার কাছে দ্রুত পৌছাতো না। তাই homosexuality আসলে কি, কেন, এইসকল বিবরণ জানাটা সহজ ছিল না। তবে আস্তে আস্তে যখন জানলাম যে সমলিঙ্গ ও বিপরীত লিংঙ্গ উভয়ের প্রতিই একজন ব্যক্তি যৌনগতভাবে আকৃষ্ট হতে পারে, বহির্বিশ্বে এটার অনেক উদাহরণ আছে এবং মানুষ নির্দ্বিধায় তা প্রকাশ করছে, তখন আসলে আমি নিজেকে ভালোভাবে জানতে পারলাম, বুঝতে পারলাম আমি কেন অন্যরকম, আমার অনুভূতি গুলো অন্য ১০টা মেয়ের থেকে আলাদা কেন, এর পেছনে আমার কি ভূমিকা, ইত্যাদি।
আমার মতো বাংলাদেশের অনেক উভকামী, সমকামী, ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তি প্রথমে নিজের সাথে নিজে যুদ্ধ করে, নিজের অনুভূতি, চাহিদা গুলোকে বোঝার জন্য (Macdonald, 2021) তারপর যুদ্ধে নামে নিজের পরিবার আপনজনদের তা বোঝানোর জন্য, পরিশেষে বাঙালি সমাজ, রীতি–নীতির গেড়াকলে পিষ্ঠ হয় তাদের জীবন। হয় পরাজয় শিকার করে ‘সাধারণের‘ বেশে জীবন যাপন করতে হয়, নয়তো নিজের আসল সত্তাকে পরিচিতি দিতে গিয়ে আপনজনের ধিক্কার শুনতে হয়, সমাজে হাসির পাত্র হতে হয়, ধর্মের কান্ডারীদের ছোবল খেতে হয়, কাউকে প্রাণ হারাতে হয় (Lavers, 2021) (Teeman, 2017)।
একজন সমকামী, উভকামী নর বা নারী নিজেকে নিয়ে দ্বিধা–দ্বন্দে ভুগে। এই দ্বিধা –দ্বন্দ্ব দূর করতে অনেকটাই সহযোগিতা করেছে অনলাইন সোশ্যাল মিডিয়া (Macdonald, 2021)| হিজড়াদের তো পরিবার থেকে বিতাড়িতই করে দেয়া হয় কারণ তাদের তো লুকিয়ে রাখা কষ্টসাদ্ধ ব্যাপার, পদে পদে ঠাট্টা, অপমান, ধিক্কার, শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার সহ্য করতে হয় তাদের (Human Dignity Trust, 2022)। আর সমকামিতা, উভকামিতা তো লুকিয়ে রাখা সম্ভব, তাই প্রকাশ হওয়ার প্রাথমিক পর্যায়ে পরিবার থেকে আপ্রাণ চেষ্টা করা হয় এই সত্যতা লুকিয়ে রাখার জন্য। এরপর ধারা ৩৭৭ তো আছেই, আইনিভাবে আমাদের মানবাধিকারকে পদদলিত করতে ‘অপ্রাকৃতিকতার‘ নাম দিয়ে (Human Dignity Trust, 2022)। সাপে বড় হয়ে ধর্মের কান্ডারীরা তো আছেই আমাদের বধ করার জন্য (Teeman, 2017)। আইন বলবে আমাদের চাহিদা ‘অপ্রাকৃতিক‘, ধর্মের বোদ্ধারা বলবে আমরা ধর্মীয় প্রথা বিরোধী। তাহলে আমাদের সৃষ্টি করলো কে ? যে সৃষ্টিকর্তার সকল সৃষ্টি অতুলনীয় বলে মুখে ফেনা তুলে ফেলে , সেই সৃষ্টিকর্তার সৃষ্ট সমকামী, উভকামী, ও হিজড়া রা কেন ‘অপ্রাকৃতিক‘, ‘ধর্মীয় প্রথা বিরোধী‘ ? তবে কি অন্য কেউ আমাদের সৃষ্টি করেছে? তাহলে তো বলতে হয় সৃষ্টিকর্তা এক নয়, অনেক। সেটা বললেও যে প্রাণে বাঁচবো তাতো নয় । বাংলাদেশের মতো একটি কুসংস্কারাছন্ন, ধর্মীয় অন্ধত্বতায় ভরা দেশে আমরা বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ দিয়ে, যুক্তি দিয়ে, শিক্ষার আলোকে নির্দ্বিধায় বলতে পারি না, সমাজের অন্য দশটা মানুষের মতো হিজড়া ও ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তিরাও স্বাভাবিক, বলতে পারি না যে বিষমকামিতার মতো সমকামিতা ও উভকামিতাও যৌনাচরণের আরো ২টা সাধারণ, স্বাভাবিক ধরণ বা প্রকারভেদ । কারণ বললে, পরিবার মেনে নেবে না, সমাজ মেনে নেবে না, আইন ৫৪ ধারা ব্যবহার করে অপদস্ত করবে, নির্যাতন করবে, ধর্মের নামে কেউ এসে গলা কাটবে !.
এখন তো অনেকেই সাহস করে নিজের প্রকৃত সত্তার প্রকাশ করছে, কত সংস্থা গঠন করা হয়েছে, কত সংঘ, কত দল গঠিত হয়েছে (Human Dignity Trust, 2022)। বাংলাদেশে হিজড়া রা তো নিজেদের অধিকার একে একে বুঝে নিচ্ছে, সমকামী ও উভকামীরাও সোচ্চার হচ্ছে। কিন্তু একদল লোক আমাদের কণ্ঠ দমিয়ে রাখতে সদা তৎপর, আর ওরা যুক্তি দিয়ে, মেধা দিয়ে বিরোধ করতে জানে না, ওরা কেবল গলা কেটে আমাদের কণ্ঠ রোধ করতে জানে !
আমি biosexual এটা প্রকাশ হওয়ার পর, আমার পরিবারের লোকেরা লজ্জিত হয়েছে, কেউ কেউ আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। আমার স্বামীকে বন্ধু মহলে ঠাট্টার শিকার হতে হয়েছে। আমার ছোট মামাতো কাকাতো মাসতুতো ভাইবোনদের আমার সাথে মিশতে বারণ করা হয়েছে । আমার বাড়ির দেয়ালে এলাকার ছেলেপেলেরা বাজে মন্তব্য লিখে রেখে গেছে । আমার বান্ধবীরা আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে তাদের পরিবারের চাপে। আমাকে অনলাইন সোশ্যাল মিডিয়াতে, আমার ফোনে নানা রকম কুশ্রী মন্তব্য, গালিগালাজ লিখে মেসেজ করা হয়েছে । মোট কথা আমাকে চারিদিক থেকে এমনভাবে খামচে ধরা হয়েছে যেন আমি নিজেকে লুকিয়ে ফেলি নয় লজ্জায় সত্যকে অস্বীকার করি, ক্ষমাপ্রার্থী হই আর নয়তো আত্তহরণ করি। প্রাণ না দিলেও, প্রাণ যাওয়ার ভয়তো আছেই।
.
References
Human Dignity Trust, 2022. Bangladesh. [Online]
Available at: https://www.humandignitytrust.org/country-profile/bangladesh/
[Accessed 22 april 2022].
Lavers, M. K., 2021. Six men convicted of murdering Bangladesh activist, USAID employee, s.l.: Washington Blade.
Macdonald, G., 2021. Understanding the Lives of Bangladesh’s LGBTI Community. International Republican Institute, 8 April.
Teeman, T., 2017. ‘My Gay Friends Were Hacked to Death In Dhaka. I Escaped.’, s.l.: Daily Beast.
.
.
25 Responses
শালি তুই আওয়ামীলীগ নিয়ে কথা বলছিস কেন?
তোকে গুম করে দিতে কিন্তু ২ মিনিটও লাগবেনা
তোকে সামনে পেলে হাড় গুড়ো করে ফেলবো
খানকির বাচ্চা, এসব আজেবাজে কথা বলা বন্ধ কর।
এই মালাউন, তোরে কিন্তু বেত দিয়ে পা থেকে মাথা পর্যন্ত পিটামু।
সব হিন্দু মালাউনদের লাঠিপেটা করে ইন্ডিয়া পাঠিয়ে দেওয়ার দাবী জানাচ্ছি।
ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করবি আর কোন আইন করা হবে না?
তোদের মতো এই নাস্তিকদের জন্যই এই আইন।,
নাস্তিকদের দেখিবামাত্র কতল করা জায়েজ
হালার পো তোরে না মানা করসিলাম লেখালেখি করতে? তারপরও? দাড়া তোরে মজা বুঝানোর সময় হয়ে গেসে।।
সাহস থাকলে দেশে আয়তো দেখি, তারপর দেখি তোর কতবড়ো হ্যাডম?
তোরে জিন্দা কবর দিবো
এগুলো সব মিথ্যাচার
তোদের মতো দেশদ্রোহীদের এই দেশ থেকে বিতাড়িত করা উচিত। মিথ্যা কথা বলার আর যায়গা পাস না?
তোরে জুতা পেটা করা উচিত। তোর দাত-মুখ ভেঙ্গে ফেলা উচিত, শালি বাইঞ্চোদ।
শালি খানকির পো তোর কি সমস্যা?
হিন্দুদের এই দেশ থেকে লাথি মেরে বের করে দেওয়া উচিত।
এই মালাউনদের জন্য এই দেশে কোন জায়গা নেই।
এই মালাউনগুলো একেকটা হারামির বাচ্চা। থাকে বাংলাদেশে আর ভারতের দালালি করে
একেকটা মালাউন ধরে জবাই করা উচিত
হিন্দুরাই এদেশের শত্রু। তারা দেশদ্রোহী। তাদেরকে এখানে থাকতে দেয়াই উচিত না।
ইহুদির বাচ্চা শালি জারজ
আপনি লেখা থামাবেন না। যতই চাপ আসুক।
খাঙ্কির বাচ্চা জিহবা কাইটা ফালামু একেবারে।
তোদের মত কিছু ইসলাম বিদ্বেষী ব্যাক্তিরাই এইসব মিথ্যে ছড়াস বিদেশের মাটিতে বসে।